আপনার সন্তান কি কথায় কথায় রেগে যাচ্ছে?

সুস্বাস্থ্যের জন্য সবার আগে প্রয়োজন মানসিকভাবেও সুস্থ থাকা। কিন্তু দুশ্চিন্তার সমস্যা এমন একটি সমস্যা, যা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের মানসিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। দুশ্চিন্তা শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদেরই হয় না, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে। তবে এর মধ্যে বাচ্চাদের মাঝে কাজ করা বিভিন্ন রকমের দুশ্চিন্তা বুঝে ওঠা বেশ কঠিন। কারণ আমাদের মতো তারা তাদের অনুভূতি বা সমস্যাগুলো কারো সাথে ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারে না।

 

বাচ্চাদের মধ্যে দুশ্চিন্তার করার সমস্যা সাধারণত সবাই উপেক্ষা করে যায়। কিন্তু এতে তাদের ওপর আরো বেশি চাপ পড়ে। তারা মানসিক ও শারীরিক দুইদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সময় থাকতে প্রত্যেক অভিভাবকদেরই সন্তানের প্রতি সতর্ক হতে হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সে লক্ষণগুলো সম্পর্কে –

আপনার সন্তানের মধ্যে মানসিক পরিবর্তনকে কখনোই উপেক্ষা করবেন না। আচরণের কোনো পরিবর্তন দেখলেই সতর্ক হোন। চুপচাপ থাকা, কথায় কথায় বিরক্তি, রেগে যাওয়া, ঘন ঘন মুড স্যুইং, কোনো কাজে বা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা এবং অস্থিরতা লক্ষ্য করলে তার সঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন। তাকে সাপোর্ট করুন।

 

এছাড়া দুশ্চিন্তার কারণে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যাও হতে পারে, যার মধ্যে মাইগ্রেন এবং ঘন ঘন মাথা ব্যথা শুরু হওয়া। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক ব্যথা, যন্ত্রণাসহ ভীষণ ক্লান্তিবোধ করা। মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই অসুস্থবোধ করা
ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আসা।

 

দুশ্চিন্তা দৈনন্দিন জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। এর কারণে পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে বাচ্চাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে। যা তাদের সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলে। যার কারণে বাচ্চারা কারো সঙ্গে বেশি একটা কথাবার্তা বলায় আগ্রহী হয়ে ওঠে না। এছাড়াও খেলাধুলা, আড্ডা থেকে দূরে থাকাসহ একা একা বেশি সময় পার করার সমসসাগুলো লক্ষ্য করা যায়।

দুশ্চিন্তার কারণে বাচ্চাদের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ঘুমাতে অসুবিধা, ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন, পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও ভীষণ ক্লান্তবোধ করা। আপনার বাচ্চার মধ্যে এসব লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন।

 

কীভাবে আপনার সন্তানকে সাপোর্ট করবেন? বাচ্চাকে বিভিন্ন দুশ্চিন্তার সমস্যা থেকে বের করে আনতে হলে অভিভাবকদেরই পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্তানের দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে। সন্তানের অনুভূতি, আবেগকে কখনোই উপেক্ষা করবেন না। আপনি আপনার বাচ্চার কাছ থেকে তার সমস্যাগুলো জানতে চান। সে সম্পর্কে তার সঙ্গে আলোচনা করুন। খোলাখুলিভাবে কথা বলুন। তার মনের কথা জানার চেষ্টা করুন এবং তার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশুন। তাকে তার সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠতে সাহায্য করুন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» হাসিনার বিচার নিয়ে উপদেষ্টাদের সতর্ক থাকতে হবে : এ্যানি

» ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ৫ বছর থাকার বিষয়ে এনসিপির সংশ্লিষ্টতা নেই’ : আখতার হোসেন

» উপদেষ্টা আসিফের সাবেক এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও এনআইডি ব্লকের সিদ্ধান্ত দুদকের

» “জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের সস্তা নাটক করছেন ড.ইউনূস” : রুমিন ফারহানা

» সৌম্যকে মুক্তি দিয়ে ‘ডাক’ মারার রেকর্ডে শীর্ষে সাকিব

» ঈদে আসছে নতুন টাকা, থাকছে না কোনও ব্যক্তির ছবি: গভর্নর

» জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১৭৪৪ জন গ্রেফতার

» উচ্চ আদালত নিয়ে মন্তব্যে সারজিস আলমকে আইনি নোটিশ

» পার্কে ককটেল বিস্ফোরণ, আহত ৫

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আপনার সন্তান কি কথায় কথায় রেগে যাচ্ছে?

সুস্বাস্থ্যের জন্য সবার আগে প্রয়োজন মানসিকভাবেও সুস্থ থাকা। কিন্তু দুশ্চিন্তার সমস্যা এমন একটি সমস্যা, যা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের মানসিক ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। দুশ্চিন্তা শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদেরই হয় না, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে। তবে এর মধ্যে বাচ্চাদের মাঝে কাজ করা বিভিন্ন রকমের দুশ্চিন্তা বুঝে ওঠা বেশ কঠিন। কারণ আমাদের মতো তারা তাদের অনুভূতি বা সমস্যাগুলো কারো সাথে ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারে না।

 

বাচ্চাদের মধ্যে দুশ্চিন্তার করার সমস্যা সাধারণত সবাই উপেক্ষা করে যায়। কিন্তু এতে তাদের ওপর আরো বেশি চাপ পড়ে। তারা মানসিক ও শারীরিক দুইদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই সময় থাকতে প্রত্যেক অভিভাবকদেরই সন্তানের প্রতি সতর্ক হতে হবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সে লক্ষণগুলো সম্পর্কে –

আপনার সন্তানের মধ্যে মানসিক পরিবর্তনকে কখনোই উপেক্ষা করবেন না। আচরণের কোনো পরিবর্তন দেখলেই সতর্ক হোন। চুপচাপ থাকা, কথায় কথায় বিরক্তি, রেগে যাওয়া, ঘন ঘন মুড স্যুইং, কোনো কাজে বা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা এবং অস্থিরতা লক্ষ্য করলে তার সঙ্গে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন। তাকে সাপোর্ট করুন।

 

এছাড়া দুশ্চিন্তার কারণে বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যাও হতে পারে, যার মধ্যে মাইগ্রেন এবং ঘন ঘন মাথা ব্যথা শুরু হওয়া। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক ব্যথা, যন্ত্রণাসহ ভীষণ ক্লান্তিবোধ করা। মাঝে মাঝে কোনো কারণ ছাড়াই অসুস্থবোধ করা
ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আসা।

 

দুশ্চিন্তা দৈনন্দিন জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে। এর কারণে পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে বাচ্চাদের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যেতে পারে। যা তাদের সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলে। যার কারণে বাচ্চারা কারো সঙ্গে বেশি একটা কথাবার্তা বলায় আগ্রহী হয়ে ওঠে না। এছাড়াও খেলাধুলা, আড্ডা থেকে দূরে থাকাসহ একা একা বেশি সময় পার করার সমসসাগুলো লক্ষ্য করা যায়।

দুশ্চিন্তার কারণে বাচ্চাদের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ঘুমাতে অসুবিধা, ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন, পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরও ভীষণ ক্লান্তবোধ করা। আপনার বাচ্চার মধ্যে এসব লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হোন।

 

কীভাবে আপনার সন্তানকে সাপোর্ট করবেন? বাচ্চাকে বিভিন্ন দুশ্চিন্তার সমস্যা থেকে বের করে আনতে হলে অভিভাবকদেরই পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্তানের দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে। সন্তানের অনুভূতি, আবেগকে কখনোই উপেক্ষা করবেন না। আপনি আপনার বাচ্চার কাছ থেকে তার সমস্যাগুলো জানতে চান। সে সম্পর্কে তার সঙ্গে আলোচনা করুন। খোলাখুলিভাবে কথা বলুন। তার মনের কথা জানার চেষ্টা করুন এবং তার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশুন। তাকে তার সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠতে সাহায্য করুন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com